সাজু খান : দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটে বড়দের ঋণ কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নীতি সুদহার বাড়িয়ে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমাতে ‘সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি’ গ্রহণ এবং খরচ কমাতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দেশের অর্থনীতির চলমান সংকট সমাধানে অর্থনীতিবিদ ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছে সরকার। এজন্য ধাপে ধাপে অর্থনীতিবিদ ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করছেন সরকারের প্রতিনিধিরা। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে যান সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক। সেখানে আতিউর রহমান নীতি সুদহার বাড়ানোসহ বেশকিছু পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। আতিউর রহমানের পাশাপাশি মোহাম্মদ তারেকও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি প্রণয়নের ওপর জোর দেন।
সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থনীতির নানা সূচক, নীতি উদ্যোগ ও তার প্রভাব নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান। সংকট কাটাতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, উপস্থাপনায় সেগুলো তুলে ধরা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতির এ কঠিন সময়ে বড় বড় ব্যবসায়ীর ঋণ কমিয়ে দিয়ে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বেশি ঋণ দেওয়ার পরামর্শ দেন ড. আতিউর রহমান। বিশেষ করে কৃষি ও এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ) খাতে ঋণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। বৈঠকে তিনি বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে যত বেশি আগ্রহ দেখান, ঋণ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা তত বেশি আগ্রহী হন না। বিপরীতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ঋণ নিলে সেই ঋণ ফেরত দেন। চলমান এ সংকটে তাই বড়দের ঋণ কিছুটা কমিয়ে দিলে তাতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে যাতে ব্যাংকগুলো বেশি আগ্রহী হয়, সেজন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম বা ঋণ নিশ্চয়তা কর্মসূচি দ্রুত চালুর জন্যও সরকারকে তিনি পরামর্শ দেন বলে জানা যায়।