নাজিরপুরে ছাত্রলীগ নেতার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা
সন্দেহের তীর প্রতিপক্ষের দিকে
আকরাম আলী ডাকুয়া; নাজিরপুর(পিরোজপুর)প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের নাজিরপুরে ছাত্রলীগ নেতার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা সন্দেহের তীর প্রতিপক্ষের দিকে। জানা গেছে গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৯টায় উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নের বাকসি গ্রামে তার নিজ বাড়ির বাথরুম থেকে ঐ ছাত্রলীগ নেতা রাজু শেখ (২৩) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
রাজু শেখ সেখমাটিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের প্রাক্তন পুলিশ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান শেখের বড় ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাজু প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যেত। অন্যান্য দিনের মতো তিনি নামাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। নামাজ শেষে আর ঘরে ফিরেনি। পরে পরিবারের লোকজন রাজুকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে বসত ঘরের পিছনে ব্যক্তিগত বাথরুমে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পরিবারের লোকজন তার লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম তাপস বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম এ আউয়ালের ঐ এলাকার ক্যাডার বাহিনী হাফিজ শেখে ও শফিক শেখ দের নেতৃত্বে রাজু শেখকে নির্বাচনে পরাজয়ের ক্ষোভে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছিল। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৫ জনের নামে মামলা হলে সম্প্রতি আসামি আব্দুর রব ও শফিক কারাগার থেকে বের হয়। তবে ঐ মামলার ১নং আসামী হাফিজ মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছে বলে এলাকার সূত্র মতে জানা যায়। তারা এলাকায় গিয়ে রাজু শেখের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে ঈদের নামাজের দিন নামাজ শেষে ঐ এলাকার প্রিন্সিপাল মাহাতাব উদ্দিন এর বাড়ীর পিছনে পুকুরের পাড়ে বসে প্রিন্সিপালের কথার এক প্রসঙ্গে আব্দুর রব ও শফিক বলে, জেল জখন খেটেছি, জেলের মজা বুঝেছি এবার একজনকে দুনিয়া থেকে বিদায় দিব ও তিনজনকে পঙ্গু করব বলে হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এদিকে ১২ই এপ্রিল ফজরের নামাজ শেষে রাজুকে ঘরে না দেখে পরিবারের লোকজন আতকিংত হয়ে পরে এবং রাজুকে খোঁজা-খুজি করতে শুরু করে। সকাল ৯টার পরে নিজেদের ব্যক্তিগত ঘরের পিছনে বাথরুমে রাজুর মৃত্যুদেহ ঝুলন্ত অবস্তায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দেখতে পেয়ে রাজুর মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহের তীর প্রতিপক্ষের দিকে। এ ব্যাপারে নাজিরপুর থানা-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা করা হলে, অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম হাওলাদার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সজল এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে ইউডি মামলা রুজু করে ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। যেহেতু এ বিষয়ে পূর্বে একটি মামলা রয়েছে তাই বিষয়টি নিয়ে আমাদের গভীর তদন্ত চলছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট এর পরে আইনি যে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, তবে যদি কেউ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।